ঢাকা,শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪

কক্সবাজার-১, চকরিয়া-পেকুয়া আসনের মন্ত্রী-এমপিদের সুখ-দু:খের কাহিনী (২য় পর্ব)

জাকের উল্লাহ চকোরী. নিজস্ব প্রতিবেদক ::

অবিভক্ত বাংলা, পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তান এবং স্বাধীন বাংলাদেশের বিগত ৮৩ বছরের ৩ অধ্যায় নিয়ে এ প্রতিবেদনটি লেখা হবে। এ প্রতিবেদনটি লিখতে আমাকে সার্বিক ভাবে যারা সহযোগিতা করেছেন, তারা হলেন আমার দীর্ঘদিনের সহযোগী চকরিয়া সাংবাদিক কল্যাণ সমিতির অর্থ সম্পাদক মো.সাইফুল ইসলাম খোকন ও চট্টগ্রাম সরকারী কলেজে অধ্যায়নরত আমার বড় ছেলে শাকিলোর রহমান শাকিল।

তথ্য সূত্র- আমার ৪০ বছরের সাংবাদিকতা জীবনের পুরানো পত্রিকা, বিভিন্ন বই ও ম্যাগাজিন থেকে এ তথ্য সংগৃহীত হয়েছে। প্রতিবেদন গুলো ধারাবাহিক ভাবে চকরিয়া নিউজ  এ ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করা হবে। প্রতিবেদন গুলো সংশোধন ও পরিবর্তন যোগ্য। পরবর্তীতে লিটল ম্যাগাজিন আকারে প্রকাশ করা হবে। আল্লাহ যদি আমাকে এতদিন বাঁচিয়ে রাখেন।

অবিভক্ত বাংলা, পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তান আমলে কক্সবাজার-১ থেকে নির্বাচিত এমপিদের পরিচিতি

প্রথম নির্বাচন-

খান বাহাদুর জালাল উদ্দিন চৌধুরী (এডভোকেট) ১৯৩৬ সালে চকরিয়া থেকে প্রথম এমপি নির্বাচিত হন। তাঁর পিতার নাম সোয়াজন চৌধুরী। সমকালীন আবুল কাশেম ফজলুল হকের কৃষক-প্রজা পার্টির মনোনয়ন নিয়ে তিনি ১৯৩৬ সালে নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেন। নির্বাচনে চৌধুরী বিপুল ভোটে জয়লাভ করেন। পরে শেরে বাংলা এ.কে ফজলুল হকের নেতৃত্বে মন্ত্রী পরিষদ গঠিত হলে তাঁকে তিনি অবিভক্ত বাংলার স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব দেন। কক্সবাজার জেলার কোন কৃতি সন্তান প্রথম মন্ত্রী পরিষদে স্থান পাওয়া ব্যক্তি হলেন তিনি। তার নামে বাটাখালী ব্রিজের পশ্চিম পাশ থেকে বদরখালী পর্যন্ত যে সড়কটি রয়েছে তার নাম দেয়া হয়েছে কে বি জালাল উদ্দিন সড়ক।

দ্বিতীয় নির্বাচন –

কবির আহমদ চৌধুরী ১৯৪৬ সালে মুসলিম লীগ থেকে নির্বাচন করে বিপুল ভোটে বিজয়ী হন। বৃহত্তর চকরিয়া-পেকুয়ার তিনি এমপি হিসেবে ২নং তালিকায় রয়েছেন। তিনি পেকুয়া উপজেলার গুরামিয়া চৌধুরীর ঔরসে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর দায়িত্বকালীন সময়ে বৃহত্তর চকরিয়ায় ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। তার বাড়ি সংলগ্ন পেকুয়া বাজারটিকে কবির আহমদ চৌধুরী বাজার হিসেবে নামকরণ করা হয়েছে।

তৃতীয় নির্বাচন-

মরহুম ফিরোজ আহমদ চৌধুরী (এডভোকেট) তিনি মরহুম কবির আহমদ চৌধুরীর ছোট ভাই। ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্টের ভোট যুদ্ধে তিনি জয়ী হন। পার্লামেন্টারীয়ান হিসেবে তিনিও এলাকায় মানুষের জন্য প্রচুর কর্মকান্ড পরিচালনা করেন। তিনি ছিলেন গণপরিষদের সদস্য। তিনি পেকুয়া উপজেলার গুরামিয়া চৌধুরীর ঔরসে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন গুরামিয়া চৌধুরীর দ্বিতীয় সন্তান। তার স্মৃতিময় জীবনের উল্লেখ যোগ্য দিক গুলো নিয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে।

তৃতীয় নির্বাচন-

সারা বাংলাদেশের আলেমদের মধ্যে উঁচুমানের যুগশ্রেষ্ট আলেমেদ্বীন ছিলেন, প্রখ্যাত আলেম মরহুম খতিবে আজম মাওলানা ছিদ্দিক আহমদ (রহ:)। ১৯০৩ সালে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার বরইতলী গ্রামের এক স¤্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম মোহাম্মদ ওজিহুল্লাহ মিয়াজী। তিনিও ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে যুক্তফ্রন্টের প্রার্থী হয়ে কুতুবদিয়া-মহেশখালী নির্বাচনী এলাকা থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে তিনি পাকিস্তান নেজামে ইসলাম পার্টির সভাপতির পদ অলংকৃত করেন।

চতুর্থ নির্বাচন-

১৯৬১ সালে মরহুম ইয়ার আলী খাঁন চৌধুরী চকরিয়ার কিছু অংশ ও বাঁশখালী এলাকা হতে মুসলীম লীগের প্রার্থী হিসেবে এম,এল, এ নির্বাচিত হন। তার নামে পেকুয়া উপজেলার রাজাখালী ইউনিয়নে রাজাখালী ইয়ার আলী খাঁন উচ্চ বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্টান রয়েছে। তিনি একজন বিশিষ্ট জমিদার ও সমাজসেবক ছিলেন।

পঞ্চম নির্বাচন-

১৯৬১ সালে মরহুম জাকেরুল হক চৌধুরী চকরিয়ার কিছু অংশ ও বাঁশখালী এলাকা হতে আওয়ামী মুসলীম লীগের প্রার্থী হিসেবে এম,পি,এ নির্বাচিত হন।

ষষ্ট নির্বাচন-

মরহুম গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী মুসলীম লীগের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়ে চকরিয়া আসন থেকে ১৯৬৫ সালে এম.এল.এ নির্বাচিত হন। তিনি কক্সবাজার জেলার চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারা গ্রামে মৃত ফজলুল করিম চৌধুরীর ঔরসে জন্মগ্রহন করেন। তিনি চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রিজ এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন। তিনি বাংলাদেশের একজন নামকরা ধনী লোক ছিলেন।

সপ্তম নির্বাচন-

বৃহত্তর চট্টগ্রামে অর্ধশত বছর আগে ২ জন আজিজ নিয়ে মানুষের মূখে মুখে মুখরোচক আলাপ আলোচনার শেষ ছিলনা। এর মধ্যে আওয়ামীলীগের লিডার ছিলেন কালো আজিজ ও মুসলিম লীগ নেতা ছিলেন লাল আজিজ। ১৯৬৫ সালে যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনে চকরিয়া আসন থেকে আজিজুর রহমান প্রকাশ লাল আজিজ পার্লামেন্টারিয়ান নির্বাচিত হন। আজিজুর রহমান বর্তমানে আমাদের মাঝে বেঁচে নেই। ৯৫ বছর বয়সে এ প্রবীন নেতা ইন্তেকাল করেন। তিনি চট্টগ্রামস্থ চকরিয়া সমিতির ১৬ বছর সভাপতি ছিলেন। তার কর্মময় জীবনে বিভিন্ন সামাজিক সেবায় আত্মনিয়োগ করেন। তার বাড়ি কক্সবাজার জেলার চকরিয়া উপজেলার হাজিয়ান গ্রামে।

অষ্টম নির্বাচন-

১৯৭০ সালে আবু সালেহ্ চকরিয়া ও সাতকানিয়া নির্বাচনী এলাকা থেকে আওয়ামীলীগের প্রার্থী হিসেবে এম.এন.এ নির্বাচিত হন। তার বাড়ি ছিলেন, চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলায়।  আসছে…তৃতীয় পর্ব

পাঠকের মতামত: